পাট্টা প্রাপকদের অন্ধকারে রেখে লক্ষ লক্ষ টাকার গাছ পাচার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বেরুগ্ৰাম পঞ্চায়েত এলাকায়

13th February 2020 বর্ধমান
পাট্টা প্রাপকদের অন্ধকারে রেখে লক্ষ লক্ষ টাকার গাছ পাচার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বেরুগ্ৰাম পঞ্চায়েত এলাকায়


পাট্টা প্রাপকদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে কেটে বিক্রি করে দেওয়া হল বৃক্ষ পাট্টার জায়গায় তাঁদেরই লাগানো গাছ।এই ঘটনা ঘিরে ব্যাপক ক্ষোভ বিক্ষোভ ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের  বেরুগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ।  বৃক্ষ পাট্টা প্রাপকরা অভিযোগ করছেন  শাসক দলের স্থানীয় দুই প্রভাবশালীর ইন্ধনেই কেটে পাচার করা হয়েছে তাঁদের গাছ ।   যদিও দিনের আলোয় সাতদিন ধরে লক্ষ লক্ষ টাকা মূল্যের গাছ কেটে পাচার হয়েগেলেও বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের কর্তাদের বক্তব্য তাঁরা গাছ কাটার কোন টেন্ডার করেন নি । কারা গাছ কেটে পাচার করলো সেই বিষয়েও কিছুই জানেন না। তবে তৃণমূল পরিচালিত বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের  সদস্য  সেখ আব্দুস সালাম এই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ।একই সঙ্গে  ঘটনার সবিস্তার উল্লেখ করে তিনি পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদ সভাধীপতি ও জামালপুরের  বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন।  প্রশাসন কি ব্যবস্থা নেয় এখন সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত বৃক্ষ পাট্টা প্রাপকরা । প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে দায়ের করা অভিযোগে আব্দুস সালাম জানিয়েছেন , রায়নার বাঁদগাছা থেকে জামালপুরের কৃষ্ণরামপুর পর্যন্ত যাবার একটি পাকা রাস্তা আছে । সেই সড়কপথে  বেরুগ্রাম অঞ্চলের শম্ভুপুর থেকে নসিপুর পর্যন্ত প্রায় ৪ কিমি রাস্তার দু-পাশে  বৃক্ষ পাট্টা প্রাপকরা গাছ লিগিয়ে ছিলেন । তাঁরাই পরিচর্যা করে  গাছ গুলি অনেক বড় করেন । ওই পাকা  রাস্তাটি চওড়া করার কাজ সবেমাত্র শুরু হয়েছে । তারই মধ্যে গত সাতদিন ধরে দিনের আলোয়  বৃক্ষ পাট্টার জায়গায় থাকা লক্ষ লক্ষ টাকা মূলের গাছ কাটা শুরু হয় । পরে সেই গাছ আবার  পাচারও করেদেওয়া হয় । অব্দুস সালাম বলেন , কারা গাছ কেটে পাচার করলো তা জানতে তিনি পঞ্চায়েত অফিসে যান । পঞ্চায়েতের আধিকারিকরা জানিয়েদেন গাছ কাটার কোন টেন্ডার পঞ্চায়েত করেনি । তাহলে দিনের আলোয় বৃক্ষ পাট্টার জায়গায় থাকা মূল্যবান গাছ কেটে পাচার কারা করলো ? এই প্রশ্নের উত্তরও পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ দিতে  পারেনি । আব্দুস সালাম বলেন , দূর্নীতিগ্রস্তরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে এমনটা নিশ্চিৎ হয়ে তিনি প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন । যদিও বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান সেখ মোবিন দাবি করেছেন  ,গাছ কেটে পাচারের ঘটনা ওই এলাকার লোকজনই ঘটিয়েছেন। গাছ কেটে পাচার করা হচ্ছে এই খবর জানার পরেই তিনি ঘটনার কথা বিডিও ও জামালপুর থানায় জানিয়েও দিয়েছেন। স্থানীয়রা অবশ্য  উপপ্রধানের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন । পাল্টা অভিযোগে তারা বলেন , প্রশাসনিক কর্তারা এই ঘটনার  যথোপযুক্ত   তদন্ত করুক । তাহলেই কেঁচো  খুড়তে গিয়ে কেউটে বেরিয়ে যাবে । একই সঙ্গে স্থানীয়রা  হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রশাসন ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাইলে সবিস্তার তাঁরা ‘ দিদিকে বলো ’ নম্বারে ফোন করে জানাবেন । জামালপুর ব্লকের বিডিও  শুভঙ্কর মজুমদার জানিয়েছেন , অভিযোগ আসার পরেই খোঁজ নিয়ে জানা যায় গাছ কাটা হয়েছে । তখনই বিষটি পুলিশকে জানানো হয় । পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছে ।যদিও জামালপুর থানার ওসি পুষ্পেন্দু জানা বলেন, পুলিশ গিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করিয়েছে এমন বক্তব্য সঠিক নয় । তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।